ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৯/০৯/২০২৫ ৮:৩৬ এএম

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিচার ১৩ বছরেও শেষ হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাক্ষীরা না আসায় মামলাগুলো ঝুলে আছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা বলছেন, রাষ্ট্র চাইলে ছবি-ভিডিও যাচাই করে বিচার করতে পারে। বিলম্বিত বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন তারা। তবে শত বছরের পুরোনো বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধমূর্তি ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয় বলেও মত তাদের।

ফেসবুকে কথিত কোরআন অবমাননার ছবিতে ট্যাগের অভিযোগ উঠেছিল উত্তম বড়ুয়া নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। এরপর প্রতিবাদ কর্মসূচির নামে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে ভয়াবহ হামলা হয়। এতে শত বছরের পুরোনো ১২টি বৌদ্ধ বিহার ও ৩০টি বসতঘর পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পরদিন জেলা উখিয়া, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৌদ্ধ বিহারে অগ্নিসংযোগ চালানো হয়।

রামুর ঘটনায় পুলিশ ১৯টি মামলা করে। এতে ৩৭৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ থেকে ১৬ হাজার জনকে আসামি করা হয়। একটি মামলা আপস-মীমাংসায় আদালতে খারিজ হয়ে যায়।
অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবে মামলাগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষকে আসামি করা হয়েছিল। ঘটনায় জড়িত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ প্রকৃত অনেক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়নি। এ নিয়ে চরম বিতর্ক ওঠার পর সাক্ষীরাও সাক্ষ্য দিতে আগ্রহ পাননি।

রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপুল বড়ুয়া বলেন, দুর্বৃত্তরা কোনো জাতির নয়, কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের নয়। তাদের বিচার হতেই হবে। তা নাহলে দুর্বৃত্তায়ন হতেই থাকবে।
সেই রাতের ঘটনা স্মরণ করে রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের অধ্যক্ষ শীলপ্রিয় থের বলেন, ‘২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ধ্বংস হয়ে যাওয়া বৌদ্ধ বিহারগুলোর সম্পদ ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। ঘটনাটি স্মরণ করলে এখনও কান্না আসে। দুর্বৃত্তরা আমাদের বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধপল্লি পুড়িয়ে দিয়ে অনেক ক্ষতি করেছে। ধ্বংস করেছে শত শত বছরের পুরোনো বৌদ্ধমূর্তি।’

১৩ বছরেও কাউকে বিচারের মুখোমুখি না করায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে মনে হচ্ছে আরও দীর্ঘ সময় বিচারের অপেক্ষা করতে হবে। ঘটনার শুরু থেকেই এটা নিয়ে রাজনীতি হয়েছে।

মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে জানিয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, মামলায় অসংখ্য আসামি। সাক্ষীরাও আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। এটিই মামলার দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ বলেও মনে করেন তিনি।

পাঠকের মতামত

দিনে শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের নামে খাবার বিতরণ, রাতে ছাত্রলীগ নেতা আটক

শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের নামে উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন ...